প্রকাশিত: ১০/০৮/২০১৬ ৮:৩১ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংস কায়দায় স্ত্রী খুন হওয়ার পর পুলিশের একজন চৌকস কর্মকর্তা হিসেবে খ্যাতি অর্জনকারী এসপি বাবুল আক্তারকে নিয়ে কেন এত লুকোছাপা চলছে তা নিয়ে কৌতূহলীদের কৌতূহল দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাবুল আক্তারের শ্বশুর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে যাচ্ছেন গত চারদিন ধরে বাবুল আক্তার পুলিশ সদর দফতরে অফিস করছে। অথচ পুলিশ সদর দফতরের কোন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না। যারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেন তারা জানাচ্ছেন এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। সর্বোপরি পুলিশ প্রধান অর্থাৎ আইজি থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোন সূত্রই বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন না।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন চট্টগ্রামে জিইসি মোড় এলাকায় সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পুত্রকে স্কুলগামী বাসে তুলে দিতে গিয়ে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুন হন। তাকে পরিকল্পিতভাবে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার তদন্তের পাশাপাশি গ্রেফতার হয় খুনী চক্রের ৭ সদস্য। যার পরিকল্পনায় ও দিকনির্দেশনায় মিতুকে খুন করা হয়েছে সেই মুসাই পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ বলে আসছে। অথচ মুসার স্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেছেন তার স্বামীকে ঘটনার পর পুলিশই ধরে নিয়ে গেছে। পাশাপাশি তৃতীয় সূত্র বলেছে, মুসাকে গুম করে ফেলা হয়েছে। এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকা-ের তদন্ত করছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ইতোমধ্যেই গ্রেফতারকৃতদের দু’জন ওয়াসিম ও নবী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। ওয়াসিম পুলিশকে বলেছেন তিনি নিজে গুলি করেছেন। কিন্তু আদালতে গিয়ে দোস চাপিয়েছেন নবীর ওপর। বলেছেন তিনি ফাঁকা গুলি করেছেন। কিন্তু নবী বলেছেন, ওয়াসিমই গুলি করে হত্যা করেছেন। উল্লেখ্য, মূল পরিকল্পনাকারী মুসা, নবী ও ওয়াসিম একটি মোটর সাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে এসে আরও চার সহযোগী নিয়ে এ হত্যা মিশন সম্পন্ন করে। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যার তদন্ত এখনও অব্যাহত রয়েছে। এরইমধ্যে রিমান্ডে আসামিদের নানা বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে চাউর হয়েছে বাবুল আক্তার নিজে এ হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এ কথা স্বীকার করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, যেদিন মিতুকে হত্যা করা হয় সেদিনই বাবুল আক্তারের পুলিশ সদর দফতরে এসপি হিসাবে যোগদানের কথা ছিল। এর আগে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পদোন্নতি লাভ করেন। কিন্তু যোগদানের আগেই স্ত্রী নিহত হওয়ার ঘটনা অবগত হয়ে র‌্যাবের হেলিকপ্টারযোগে তাকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। স্ত্রীর লাশ নিয়ে বিভিন্ন কার্যাদি সম্পন্ন করে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যায় একটি হেলিকপ্টারে তিনি ঢাকায় চলে যান। সেই থেকে তিনি ঢাকায় শ্বশুরবাড়িতে রয়েছেন। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না। অফিসেও যাচ্ছিলেন না। ফলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার ব্যাপারে নানা ধরনের তথ্য সংবলিত সংবাদ বেরিয়েছে। এসব সংবাদের সত্য মিথ্যা কারও জানা নেই। যে যেভাবে তথ্য পেয়েছে তাই প্রচার করেছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশের একজন কমান্ডিং অফিসারের পদে থেকে বাবুল আক্তারের ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতর নিশ্চুপ কেন। পুলিশ সদর দফতরে প্রশাসনিক উইংয়ের পাশাপাশি পাবলিক রিলেসনস উইংও রয়েছে। সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হিসেবে আইজি এবং তদারকি কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়েছে। উৎসুক মহলের পক্ষ থেকে একটি মাত্র জিজ্ঞাসা বাবুল আক্তারের ব্যাপারে পুলিশের সুনির্দিষ্ট বক্তব্য নেই কেন। তিনি কি চাকরিতে আছেন, নাকি সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন, নাকি চাকরিচ্যুত হয়েছেন, নাকি স্ত্রী হত্যার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে চাকরি থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এসব প্রশ্ন বারে বারে ঘুরপাক খাচ্ছে। স্ত্রী হত্যার তদন্তে যদি তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে আইন আইনের গতিতে চলবে। অর্থাৎ তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করাই আইনের কথা। আর যদি স্ত্রী হত্যার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা না থাকে তাহলে তিনি চাকরিতে যোগদান না করে কেনই বা বাইরে সময় কাটাচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে বাবুল আক্তারের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলে আসছেন তার জামাতা প্রতিদিন সকাল ৯টায় অফিসে যান ৩টার পর ফিরে আসেন। কিন্তু পুলিশের মিডিয়া উইং থেকে বলা হচ্ছে বিষয়টি তাদের জানা নেই। এছাড়া তার চাকরিগত ব্যাপারে কোন সমস্যা আছে কি নেই তাও তাদের জানা নেই। বিষয়টি অনেকটা বিস্ময়করও বটে। তার স্ত্রী হত্যাকান্ড নিয়ে এক ধরনের লুকোচুরির ঘটনা ঘটছে বলে উৎসুক মহল বিশ্বাস করে। এর পাশাপাশি তার চাকরি আছে কি নেই, না থাকলে কেন নেই, থাকলে তাকে কোথায় পদায়ন করা হয়েছে এমনকি তিনি গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি কেন পরিষ্কার করছেন না অথবা র্তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তার ব্যাপারে কেন মুখ বন্ধ রেখেছেন তা নিয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন জাগছে। পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে বিষয়টি খোলাসা করা কোন বিষয় নয়। অথচ বাবুল আক্তারকে নিয়ে এক ধরনের লুকোছাপা ঘটনায় মানুষের মনে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহ দানা বাধছে এবং এর পাশাপাশি স্ত্রী হত্যা নিয়ে নানা কথা গুজব আকারে প্রতিনিয়ত চাউর হচ্ছে । জনকণ্ঠ

পাঠকের মতামত

সভাপতি- রশিদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টমাটিন যাত্রী পরিবহন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন

সেন্টমাটিন যাত্রী পরিবহন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ...

আজহারীর পরবর্তী মাহফিল যে স্থানে

সিলেটে যাচ্ছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।আগামীকাল বৃহস্পতিবার আনজুমানে খেদমতে কুরআন আয়োজিত ৩৬তম তাফসিরুল ...